Monday, September 23, 2019

অমিত সরকার





এই মুহূর্তে আমার সমবয়সী কবিতারা  

সমবয়স্ক কবিতারা 
যারা পায়ে পায়ে পঞ্চাশ পেরিয়েছে  
এই মুহূর্তে তাদের চিবুক
ঝুঁকে রয়েছে ভিজে জ্যোৎস্নায়
অন্ধকার গালে শুকিয়ে রয়েছে জলের দাগ
ফাঁকা হয়ে আসা সাদা সিঁথিজুড়ে  
পাঠকবিহীন আকাঁড়া বাতাস
অথচ চারপাশ জুড়ে কত আলোপথ, ছড়ানো গসপেল  
স্বাস্থ্যবতী কিবোর্ড ঘিরে ঘিরে  
অক্ষরেরা নেচে উঠছে সহজিয়া     
ভাষাদের তীব্র কোরাসে 
ভেঙে পড়ছে গৃহপালিত উৎসব, ফ্যাকাশে প্রত্যাশা      
  
আমি তো আড়কাঠি বা দালাল নই    
যে সেই ছেঁড়া চটি, সেফটিপিন আটকানো
মেয়েটির জন্যে এখন একটা ক্লোজআপ
অথবা লিখে রাখছি মাঝরাতে বাড়ি ফেরা বিজ্ঞাপন      

শুধু মহব্বতের পেরেকে ঝুলে থাকা      
একটা মর্চে ধরা মেমারি গেম     
আমার হাড়গোড় মজ্জা মাংস চিবিয়ে খেতে খেতে   
হিংস্র শিকড় চারিয়ে দিচ্ছে         
এই মুহূর্তে মাথার ভেতরে...            


পিত্তিরং অন্ধকার

হৃদমাঝারে লাল হবে, তা নয়
ছেয়ে আছে শুধু পিত্তিরং অন্ধকার       
ধরো আমি তাঁকেই বাজাচ্ছি সুজনের তেঁতুলপাতায়     
কামরায় ঠেলাঠেলি করে এইমাত্র উঠলেন কবিতাডাকিনী
সুর শুনে উঁকিঝুঁকি চাইছেন এপাশে ওপাশে, আঁচলে রঙিন ছোপ  
বটুয়ার ভেতরে ভরা বিষাদখয়ের রঙা আলো     
পাশ দিয়ে শোঁশোঁ করে উড়ে যাচ্ছে গাছ উল্টো পায়ে
ঝাঁটা দিয়ে পরিষ্কার করছে শ্রবণা, ভরণী, কৃত্তিকাদের    

এখানেই সাধনে বসবে ভৈরবী আমার  
অভিমান, বোলো তাকে আমার তো দড়িকলসি নেই কোনও 
নেই লাথিঝাঁটা, মায়ামোহ, কামনাবাসনা, এমনকি পিরীতিও  
শুধু মাঝে মাঝে চোরের ওপর রাগে মাটি পেতে ভাত খাই  
শুধু এই পঞ্চমুন্ডির পাঁচটি প্রাচীন খুলি বুঝে নেয় রোজের হিসেব   
শুধু এই পাঁচটি গাছের শব একইসঙ্গে মিশে যায় পরাণকথায়    

এসব বলিনি বুঝি আগে 
বলিনি স্বভাবদোষে কীভাবে যে অসম্ভব ঋণ
আজও জমা রয়ে গেল কবিতাডাকিনীর কাছে     
দাঁড়াও, শেষবার আমিই তবে জাগিয়ে তুলব আবার       
এইসব হাড়গোড়, আতর, অগুরুর মৌসম  
আকথা কুকথা দিয়ে ফুটিয়ে তুলব গায়ের বিবাহফুল    
তুমি শুধু একবার বোলো তাকে
শুষে নিতে এই পিত্তিরং অন্ধকারটুকু...      


No comments:

Post a Comment