দুটি কবিতা
উত্তরণের আখ্যান
পুরোনো বাড়ির ছাদে পাখি বসে থাকা সাদাকালো
টিভির অ্যান্টেনাগুলো এখন সেভাবে আর চোখে
পড়ে না,
অথচ
ধারাবাহিকের যুগ বদলের রং এসে পড়ে
এদিকে-ওদিকে শাখা মেলে দেওয়া সুদীর্ঘ
রাস্তায়
তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে জ্বলে ত্রিফলা
বাতির ল্যাম্প।
তারই নীচে বসে এক ধর্ষিতা কিশোরী তার
ছিঁড়ে যাওয়া সতীচ্ছদ স্তনের নরম চামড়ায় জোড়াতালি
দিয়ে
সেলাই করতে করতে সে লিখে চলে তার উত্তরণের
আখ্যান।
তার কাছে এলে কালি ও কলম ঝরনা হয়ে যায়,
মরমের অনেক অতল থেকে তুলে আনা জল
জীবনের সবচেয়ে উচ্চতর শৃঙ্গ থেকে সপ্ততলের
গভীরে গিয়ে
নদীর মতো একূল গড়ে, ও
সেকূল ভেঙে পূর্ণিমার চাঁদের লোকেরা
নির্জন রাস্তায় নেমে তাকে দেখতে এসে
চন্দ্রযানে করে নিয়ে যায় কবিতার বীজ।
মেয়েটি একাকী বসে প্রেমিকের বীর্য দিয়ে
দু-একটি কবিতা
মেল বডিতে লিখে পাঠিয়ে দেয় আসন্ন স্বামীর
ঠিকানায়।
***
অথবা বিষাক্ত ভয়
আমরা যে এতদিন বাহুতে বাহুতে বেঁধে
ত্রিভুজ তৈরি করে ছিলাম আজ তা দিলাম খুলে, কোণ
নেই
কেন্দ্রবিন্দু নেই আপাতত দাঁড়িয়ে আছি
অনির্দিষ্ট সীমায়
পায়ের তলায় মাটি আছে তবু
দাঁড়ানোর জায়গা খুঁজে পাচ্ছি না, দেয়ালে
ঠেকে গেছে পিঠ।
এখন কল্পনা করি পিঠে
কামড় বসাচ্ছে কেউ, হতে
পারে দেয়ালে লুকিয়ে থাকা বিছে
বোড়া সাপ, কিংবা সুখ, দুঃখ ক্লান্তি অথবা বিষাক্ত ভয়,
পা থেকে মাথা পর্যন্ত মিশে যাচ্ছে বিষ।
নিজেদের দেহ মন নিজেদের তীক্ষ্ণ
দাঁতের কামড়ে পচে জন্ম নিচ্ছে ঘৃণা, পোকা
যেখানে যেখানে ঝরে পড়ছে রস মরে যাচ্ছে সব
ঘাস।
সব ঘাস মরে গেলে আমার এ শশকীয় কল্পনা খাবে
কী,
আমাদের হরিণী যোনির পূজা হবে কীসে?
ওই যে শিশিরে ধুয়ে এসে পা, বসেছে
পূর্বপুরুষের রক্তে রক্তে
উপদংশের যন্ত্রণা বয়ে নিয়ে চলা অন্ধ
দুর্গা।
No comments:
Post a Comment