হারেমের
রূপসীটিকে কোনো এক স্মৃতিকাতর খোজা
ভোরের বেলা বাতাস এলোমেলো
আসীনা তুমি উদাস ঝরোখায়
প্রাকৃত চুলে যশোর চিরুনিটি
লুপ্তমেঘে স্মৃতি শরীর পায়
অথবা সে কি নিভৃতে ঝরেছিল?
তখনও রাত, না হয় ভোর হোক
দিবাভাগের আলো ফোটার আগে
নিরালা সেই নদীর পাড়ে মাঠে
তোমাকে গূঢ় পৌঁছে দিতে হবে
জ্যোৎস্না ছিল উদাসী নির্মোক?
কুপীর আলো, হাওয়ারা নিশ্চুপ
সামনে এল ধূসর কাঁটাঝোপ
সামলে নিয়ে পেরিয়ে যেতে যেতে
আয়তনীল আমার দুটি চোখ
দেখে কি ছিল নিভৃতে ওই রূপ?
পায়ের গোছে শিখার আভা নাচে
উদয়ভানু কুসুমসঙ্কাশ
ফর্সা সেই লুকোনো পদপাতে
গোড়ালি জুড়ে রূপকথার আলো
কী কথা স্মৃতি অবাধে বলেছিল?
হারেমের রূপসীর নাগরিক পুনর্জন্ম
ব্যবহৃত শহরের পথে পথে একা একা সারাদিন হেঁটে,
এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে চিকিৎসা-আলয়ে
ক্লান্ত ধোঁয়া ধুলাভরা শ্রমবাহ রাস্তা পার হয়ে
ফিরেছ বিষণ্ণ ঘরে চটি খুলে চৌকাঠ পেরিয়ে,
শাড়িতে কাদার দাগ ক্ষয়ে আসা পায়ের পাতায়
হাঁটু ছড়ে গেছে সেই রিকশায় উঠবার সময়—
তুলো আর স্যাভলন হাতে নিয়ে কেউ নেই জানি,
কেউ নেই একগ্লাস পানি দেবে ফিলটার গড়িয়ে,
চোখে ড্রপ নিতে হবে, একা তুমি কীভাবে যে নেবে,
কারেন্ট এখন নেই, সেলফোন চার্জবিরহিত,
অন্ধকারে চিত হয়ে শুয়ে শুয়ে ঘন অন্ধকারে
ভাবো বহু জন্ম গেল পরিযায়ী পাখির মতন—
জীবন ইশারাকিসসা অর্থহীন বোবা কথকের।
অথচ শৈশব ছিল ঘাসে ভরা শিউলির রাশি,
কিশোরী দুপুর ছিল খুলনার জানালায় সম্মোহিত পাখিদের ডাকে;
এবং বিকেলে রোদ মরে এলে সন্ধ্যার জোনাকি
তোমার সে নাকছাবি হবে বলে উড়ে এসে ঘরে
বসেছিল অন্ধকারে মৃদুনীল আলো হয়ে ঠোঁটের উপরে,
বলেছিল রূপঝরা বাতি, আয়নাও বলেছিল,
‘বলো তো কে রূপবতী মেয়ে?’ বলেছিল বিম্ববতী মায়াবিনী স্বরে।
তারপর আধোঘুমে রুক্ষ মাঠ, নদীপারে তাঞ্জামে বহুপথ বেয়ে
হারেমের ঝরোখায় দিন গেল শুধু চেয়ে চেয়ে;
পায়ের ফর্সা গোছ কে চকিতে দেখেছিল ভোরের আভাতে?
হাবসি খোজার বুকে উতরোল কতো স্মৃতি জমে জমে আলেখপাহাড়;
সেসব কে মনে রাখে এইসব নাগরিক ক্লান্তঝুম রাতে?
স্মৃতির ফেনারা তবু জন্মপথ পার হয়ে ফিরে এসে নীল স্নানঘরে
শাওয়ারের ক্ষীণস্রোতে সাবানের সাথে মিশে কেন রোজ চোখ জ্বালা
করে?
বাঃ!
ReplyDelete