Monday, September 23, 2019

মণিশংকর বিশ্বাস






কান্না

গভীর জলের মাছ তুমি—

জলের অনেক নিচে যেই মনোরম
তাকে আমি প্রত্যক্ষ করেছি

তোমার ভিতর


লেবুফুল

আজ দুপুরের দিকে চব্বিশ বছরের পুরনো একটা হাওয়া আসে
প্রথমে মনে হয় সুলতা
তারপর বুঝি, সে ওর আইবুড়ো মেজদিদি
আজো সেই একইরকম
দাঁত সামান্য উঁচু, মাজা গায়ের রঙ
ঈষৎ বাদামী চোখসবেদা গাছের নিচে কবেকার
ভীষণ পিচ্ছিল সবুজ ঘাটের রাণা
যেখানে আমরা কতবার আছাড় খেয়েছি

আর লেবুফুলের গন্ধে ভরে গেছে আমাদের বয়ঃসন্ধি






অনুবাদ কবিতা

দেয়ালে পিঁপড়ের সারি স্যানিটাইজার দিয়ে মুছে ফেলা হল বৃষ্টির আগে পিঁপড়েরা ওদের পুরনো কলোনি ছেড়ে নিরাপদ আবাসস্থলের দিকে চলে যাচ্ছিল এর মধ্যেই পথ হারালো ওরা মুছে গেল গন্ধরেখা, মুছে গেল পথশ্রম, শ্রমিক, কুলি-কামিনের নতুন ঘরের দিকে চলে যাবার জেনেটিক ঘোরএর পরেও যারা বেঁচে থাকবে, তাদের পুরনো ঘর ভেসে যাবে বৃষ্টি-বাদলে, কীটনাশকে মুছে যা্বে পিঁপড়ে-কলোনি, একটা পিঁপড়ে ডায়ালেক্ট!

অনেকটা ঠিক এই একইভাবে কেউ মুছে ফেলবে তোমার ভাষা তোমার রক্ত শুকিয়ে উদ্বায়ী হয়ে আকাশে একটা লাল রঙ্গের মেঘ তৈরী করবে

খুব দূরে একটা অতিবেগুনী আলোর ভিতর বসে কেউ টুকে নেবে এই দৃশ্য
হয়ত একটা ছবি করে তাকে টাঙিয়ে রাখবে কোনো দেয়ালে



প্লেজ্যারিজম

ঘরের ভিতর যে ধুলো
তার সত্তর শতাংশ মানুষের ত্বকের ভগ্নাংশ—
ছিন্ন ত্বক, মৃত কোষকলা, ঘাপটি মেরে বসে থাকে
খাটের তলায়, বইয়ের তাকে, আলমারিতে
জীবন্ত শরীর তাকে ভয় পায়—
মনে করে অন্য কেউ ঢুকে পড়ছে তার এলাকায়—
অনুপ্রবেশকারী!

হাঁচি পায়।



বিমুক্তি

তোমার সিঁথিতে সিঁদুর
অকূলে সন্ধ্যাপ্রদীপ
আমার দাবনায় বসে
একটি নয়, দু'টি কাক
ঠোকরায় সারাক্ষণ—

চোর আর চরণদাস

কোন মানে হয় বলো?

অক্ষরবৃত্তের মতো টানটান নীল
আকাশে জ্বলন্ত রথ
নীপবনে ভাল লাগে
সাদা মেঘ কালো মেঘ—
ওদেরই সেজো-বোন
মজে যাওয়া পুকুরের মতো
শ্যামল মেয়েটি— ডাকি তাকে
মনে মনে ঘাটের রানায়।
“যৌনতা”, আমি তাকে বলি—
“এত ভালবাসি তোকে, সহোদরার মতন
কেন তুই বুঝেও বুঝিস না
আমার শরীরেও তিনভাগ বিষ
শুধু একভাগ জলে-ভাসা স্থলপদ্ম


1 comment:

  1. আহা। "চোর আর চরনদাস/ কোনো মানে হয় বলো?"

    ReplyDelete