বিস্মরণ, ঢেউ
মুছে যাও কালচক্রে কয়েক বছর
মুছে যাও সংলগ্ন প্রাণ মুছে যাও
বলে ফেলা সব কথা
কাব্য শঠ, অক্ষরের গায়ে অক্ষর বসানোর
হিম খেলা, খেলাই
ওতে প্রাণ নেই। ভরসা করে মাথা রাখতে
গেলে
জগতের উদ্ভিদ ও প্রাণীদের দোষ লাগা
সব অঙ্গ,ভয় দেখায়,
আকাশে উর্দ্ধমুখে হাহাকার পান করে—
ক্ষমা ছোঁড়াছুঁড়ি করে কারা বেঁচে
থাকে?
কারা সব কিছু ভুলে যাওয়া অভ্যেস
করে রোজ সকালে উঠে,
নিষ্ঠাভরে শ্বাস নেয়,
ততোধিক ভক্তিভরে শ্বাস ছাড়ে গুনে গুনে
পরস্পর ছিঁড়ে গিয়ে আমাদের যা বোধ
হল—
পৃথিবী তাকে শিক্ষা নাম দিলেও
আমি তাকে ব্যাথা অবহ নাম দিলেও
তুমি তাকে উপায় বা অভিসন্ধি বলতেই
পারো—
কেননা আমাদের প্রতিটি যৌথকর্ম কাঁচ
বাঁচিয়ে হাঁটা
তাই আমাদের রমন এত অনিশ্চিত, সুফলা
হয়ে যাওয়ার ভয় পায়ে পায়ে
কেননা আমাদের পরস্পরকে জানা হোটেলের
ঘরের মত;
তাই আমাকে বীজবিন্দু ধারণ করতে হয়,
তুমি চুম্বনকালে ওষ্ঠ ঢেকে রাখো
নারীতে প্রবেশ আসলে একাধিক ধোঁকার
স্তর স্তর অন্ধকার যার প্রান্তদেশে কিছুই স্পর্শ করার নেই ও পৃষ্ঠদেশ পুরোটাই আঢাকা
অথবা
নারীতে প্রবেশ সমুদ্রে যাওয়ার মতই,
স্নান থেকে ফিরে আবার স্নান করতে হয়
— এরকম সব বোধ চোখ জ্বেলে বসা অন্ধকারে
গুমোটে নোনা বাতাসের ধারে একশো – একশো কুড়ি দরে সাজানো। আমাদের পায়ে পায়ে গরম শুকনো
বালি ঠেলে ঠেলে ফিরতে হবে
কে বলে সমুদ্র অপার!
এই যে বালির শিশু ঢিবি
আঁজলায় খোঁড়া জল
তাতে ফুঁ দিলে ঢেউ এল
এটুকুই সমুদ্র।
চোখের পরিধি বাড়ালে যে জলের পাহাড়
কালো দিগন্ত,পাথরে আছড়ে পড়া ফেনাময়
ভয়—
তা অন্য কারও
তা আমাদের না
শোনা যায় দীর্ঘ দুবছর তিনি ব্যাথা
ধরে রেখেছিলেন। দীর্ঘ দুবছর আসন্ন প্রসব আটকে অন্তস্থ ভ্রুণের সাথে কথোপকথন লিখে রাখছিলেন।
সেই লেখা এতই মহান ও তিনি যে এরকম লিখছেন সেই রটনা এতই মাহাত্ম্য পায় যে শিশুটির শেষ
পর্যন্ত কি হল কেউ খবর রাখে না, এমনকি তিনিও অন্যতর মহানতার চাপে তার কথা ভুলে যান।
প্রসবে আটকে থাকা প্রাণ, মরে না, কিন্তু না ভ্রুণ থাকে না ভূমিস্পর্শ করে শিশু হয়ে
ওঠে। মরণের অধিক সেই দ্বন্দ্ব জমাট বেঁধে তার অদৃষ্ট হয়।
সৈকত বরাবর কররেখা চলে গেছে
তুমি বিরাটের নেশায় নেশায় জলের দিকে
যাও
তীরে সুফল একহাতে ধরে রেখে— আমি
দেখি
ঢেউ তোমাকে একবার করে নিয়ে যায়
তুচ্ছ ভেবে হেসে হেসে আবার ফিরিয়ে
রাখে—
ভেজা বালুতে আঁচড়ের উপমায় কিছু যেন
লেখা হয়েছিল খেলাচ্ছলে
জগতের জোয়ারের জলে নিশ্চই মুছে গেছে
পরদিন
জগত আড়াল হল। আমরা পূর্বাভাষেই হোটেলে
আড়াল নিলাম। মৃত লাল কাঁকড়াটিকে আমরা সঙ্গে করে এনেছি। বা কাঁকড়াটি রয়ে গেছে সৈকতেই।
আমরা তার লুকোনোর ব্যর্থতাটুকু এনেছি।
কে তোমায় খুঁজতে বেরিয়ে আর ফেরেনি। আমি জানি ক’টাদিন
পরেই তুমি আবার আসবে। কয় দিনের জন্য। এই-ই সত্য। ঝাউবন আমাদের সন্ধ্যে ঘনানো দেখেছে।
অন্ধকার মোহনার থেকে শুধু শব্দ শুনে আমরা ফিরে
এসেছি— শাদা আবছা ছায়াপথ ওই দূর গর্জনের কাছে তোমার হৃদয়ে ঢুকে গেছে। ড্রাইভার ফিকে
হেসে বলল, যান, দেখে আসুন।
হৃদয়ে পাপ ঘনায়।
কার দেহ গৃহচাপা দিয়ে এসেছি!
বাহারি ঝিনুকের সাথে কার টুকরো আঙ্গুল
সংগ্রহে উঠে এল !আমাদের অপরাধ হয়।
সুখ পেলে আমাদের অপরাধ হয় গো,
সুখ না পেলেও কি তা অপরাধ নয়!
একটা ছোট, পরেরটা তার চেয়ে বড়ো,
এভাবেই আসে,
পর্যটকে ঢেউ বলে, আরও আরও ভেতরে
গিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে খেলে—
আমরা জানি, সমস্যা, তার পেছু পেছু
তার চেয়েও বড়ো
সমাধান নেই
ভালো থাকা, সে কি জলকণা!
অল্প আঁচেই ওষ্ঠে চড়া পড়ে, কন্ঠার
দীনতা প্রকট হয়ে
জগতের সামনে চেঁচাতে থাকে, একান্ত
বালির দূর্গ সুখের দিন,
আর অশান্তির তুলনা কেবল জোয়ার
অতঃপর সামান্য সুখের আশ্বাসে বিস্মরণ
সৃষ্টি হয়,
আগের ঢেউ ভুলে যাওয়াই আসলে পরের
ঢেউ—
এরকম পঙক্তি আসে, নিজেকে থেকে থেকে
বাহবাও আসে,
সামান্য সুখের কথাতেই সব লেখা মুড়িয়ে
আসে আপাততঃ
এই লেখা পড়তে পড়তে মনে হল,একটা জার্নির মধ্যে দিয়ে গেলাম, যার ঘোর কাটছে না।
ReplyDeleteAmader somaj er proticchobi. Amar khama chora kore jara benche ache line ta khub valo laglo
ReplyDelete