Monday, September 23, 2019

শূদ্রক উপাধ্যায়





আত্মীয়  

হাওয়ার সাথে দুলতে দুলতে নদী ভেসে এলে
কান্না পরে থাকে; পরে থাকে কতগুলি জামার কলার।

শোনো, তোমাদের বলছি
আমি ভাসমান মেঘ ও পাখিদের সংলাপ জানি।
যুদ্ধের শেষে ধোঁয়াময় টিলা ও রক্তমাটির সংলাপ জানি।
দেখেছি, চারিদিক থমথম করে হঠাৎ মায়ের চোখের রঙ পালটে যেতে
আর রাষ্ট্রের উৎসব...

হাওয়ার সাথে হাওয়া দোল খায়
মিশে যায়
জলের সাথে জল
শরীরের সাথে শরীর ...

শোনো, তোমাদের বলছি
সীমান্তের গাঁয়ে যে ঘর, তামটে শিশু, পরিচয়হীন মানুষ
অনাদরে বেড়ে ওঠা গাছ ও পাখি সবাই আমার আত্মীয়।
ঘূর্ণায়মান সিংহাসন থেকে নেমে মাটিতে বসে দেখো
মায়ের শাড়ির আঁচলে মুখ মোছার মতোই শান্তি পাবে।


ঘৃণা দিতে চাই

এতকাল ভালোবাসা দিয়ে এসছি, এবার কিছু ঘৃণা দিতে চাই
কেননা তোমার জানা প্রয়োজন মুদ্রার মতো মানুষেরও দুটি চরিত্র থাকে।

অন্ধকার আসলে একটা উপলক্ষ্য মাত্র, দিনের মতো
অন্ধকার আসলে একটা প্রয়োজন মাত্র, দিনের মতো
অন্ধকার আসলে নিজেকে সময় দেওয়ার আছিলা...

এত এত উচ্ছ্বাসের পাশে আমায় শুইয়ে রাখলে
শামুকের মতো দুঃখ হেঁটে যায়
হেঁটে যায় চকচকে বালি আর নোনা জল।

মৃয়মান আলোর সাথে লড়াই করব বলে গোধূলি ডেকে আনি
ডাকি ভুল প্রজাপতি ও মাকড়সা।
তারা ডেকে আনে এমন হাজারো কীট ও পতঙ্গ...

তুলসি বেদিতে আলো জ্বেলে রমণী ঘরে ঢুকে যায়
তখন মাটির প্রদীপ ঘিরে ছুটে আসে আরও সৈন্য
ঝিঁঝিঁ ডাকে। হাওয়া ছুটে আসে। ছুঁতে চায় সলতের আগুন।

এভাবে একে একে সবাই চলে এলে আমি ঘৃণা ছুড়ে দিই
ভালোবাসার দিকে, মানুষের দিকে, রমণের দিকে...

দিনযাপন

উত্তরের হাওয়ায় দুলছে একটা চোখ, এখান থেকে
নদী নেমে যাওয়ার কথা বলেছিল কেউ।
বৃষ্টির উল্লাসে কথারা হঠাৎ চুপচাপ,
শুধু প্রেমিকের দৃশ্য বদলাতে থাকে একে একে ...  

আমাদের দক্ষিণের ব্যালকনিতে
কাজের দিদি ভুল করে জামা কাপড়-এর বদলে
একটা চোখ শুকাতে দিয়েছে আজ...

ডাকপিয়নের সাইকেল ক্রমশ এগিয়ে আসছে
কচি কলাপাতা রঙের শাড়ি পড়া মেয়েটির দিকে।
হঠাৎই কেউ রোদ্দুর ঢেকে দিল...

লোকটা ক্রমশ পাগল হয়ে যাচ্ছে,
লোকটা ক্রমশ আরও আরও পশ্চিমে সরে যাচ্ছে;...
নদী গর্ভ থেকে গোগ্রাসে তুলে নিই সেই সব কথামালা ,
এতদিন লুকিয়ে রেখেছিলে কেন ?

প্রেমিকার ভেজা চুলের ভেতর বিষণ্ণতার ক্ষত জমাট বাঁধছে



No comments:

Post a Comment