দহনান্তে দগ্ধ মহাকাল
১
দহনান্তে দগ্ধ ইহকাল
দহনান্তে দগ্ধ এশরীর
দহনান্তে ভষ্ম অবয়ব
দহনান্তে ভাসে খন্ড নাভি
দহনান্তে অবেলার আলো
দহনান্তে সম্পর্কের ছেদ
দহনান্তে মৃতদের কথা
দহনান্তে জীবন ফুরলো
দহনান্তে নতুনের ঘর
কিছুদিন খেলা শেষ হলো
দহনের গভীরের আলো
আমাকে নতুন ভোর দিল
ভোরের আলোর রূপ তুমি
বাহু মূল জুড়ে এসে বসো
দহনান্তে ভষ্ম আঁকি বুকি
ইহকাল দহনে ফুরলো....
দহনান্তে ক্লান্ত এশরীর
মিশে যাবে মাটির বুকেতে
নবজন্ম যদি জেগে ওঠে
ঠিকানা বিহীন যাত্রাপথে
ইহকাল পরকাল সব
দহনান্তে শূন্য পরে রয়
জটিল জীবন আমাদের
মাটির ধুলোয় মিশে যায়।।
2
ধানের জমির দগ্ধ দেহ
বুক জুড়ে হাহাকার পোড়ে
ভস্মীভূত ধুম্রজাল আলো
ভেদ করে জেগে ওঠে চাঁদ
চাঁদের গভীরে মুখচ্ছবি
অসুখের মতো রাত্রিকাল
বেদনায় চন্দ্রাহত আমি
হাহাকার জুড়ে নামে ত্রাস!
গভীর অসুখে ছেয়ে গেছে
প্রবাহ স্রোতের বিপরীতে
যাত্রাপথ জুড়ে পরে আছে
নিরুদ্দেশ পথিক স্বভাব.....
আমাকে জাগিয়ে রাখো তুমি
জাগিয়ে রেখেছে নিশিকাল
বেদনার দেহ পুড়ে গেলে
জেগে রয় মানুষের গান
চন্দ্রাহত পরে আছি একা
ধান কাটা আল জমি জুড়ে
হাহাকার চোখ দুটি জেগে
তোমার আমার দেহভার।
৩
বাতাসে বারুদ ঘ্রাণ ভাসে
অশণি প্রলয় সর্বনাশে-
জলের গভীরে ডুবে আছে
বিকেল বিদায় ব্যাথা গুলি
কীরাত বর্নের শব গুলি
হাতের তালুতে রক্ত ঘোর
অর্ধেক জীবন জুড়ে পোড়ে
শেষের দিনের নিমন্ত্রণ-
এদের ওদের পাড়া ঘর
একের অনেক হয়ে বাঁচা
সুদিন জাগিয়ে রাখে আলো
বাতাস বিরহ ঝরা ফুল......
বারুদ শহর একাকার
কান্নার ধ্বনির রাত্রিদিন
প্রহরে প্রহরে জেগে আছে
লুকনো ফুলের সংসার!
তবুও মানুষ বেঁচে আছে
মাটির দেহের ঘরবাড়ি
তোমার দেহেতে মিশে আছে
ফুলের ঝরার দিন গুলি।।
৪
আলেয়া জীবন জুড়ে শুধু
কীর্তন করুন সুর ভাসে
গ্ৰীষ্মের দুপুরে দুটি প্রান
নিবিড় পার্কের বেঞ্চে বসে
জড়িয়ে ধরেছে মহাপ্রাণ
অর্ধেক ভূখণ্ড জ্জ্বলে শেষ
তবুও তাদের স্বপ্নে দেশ
অরন্যে এপ্রিল দিনগুলি
এদেশ আমার আমাদের
ধর্ম অর্থ কাম মোক্ষ দেহ
প্রেমেতে রয়েছে নর-নারী
শেষের সঞ্চয় নিভে এলো
গৃহের গভীরে জেগে শোক
শোকের ভিতরে জ্বলে চোখ
কান্নার শব্দের প্রিয় নাম
শুশ্রূষা তোমার জন্ম হোক।
৫
স্বজন স্বদেশ ভালোবাসা
অরন্য নদীর নারী কথা
তাদের ছিনিয়ে নিতে চাও
অন্ধের অখণ্ড অভিশাপ
শ্মশানে ফুলের জন্ম হবে
ফুলের নিরিহ শবদেহ
উন্মাদ স্বরের উচ্চারণ
উচ্ছেদ স্বপ্নের পরে জেগে।
অরন্যে ফুলের সুবাতাস
পাখির কুজন ঘোরে ফেরে
তোমার আমার বনপথ
উচ্ছিষ্ট করেছে যারা আজ
তাদের মাথায় বজ্রপাত
মানব প্রেমের জয় হোক।।
৬
এমন সোনার দেহ মন
পাতালে জেগেছে বারিধারা
ধানের শিষের তৃষ্ণা দুধ
পাখির চঞ্চুর খুঁটে খাওয়া
আমাকে জাগিয়ে মহাকাল
প্রহর চুম্বন আত্মভোলা
বরষা পিড়ীত দিনে একা
যমুনা নদীকে খুজে পাওয়া
খুঁজেছ পরানে আঁখি জলে
খুঁজেছ রিরহ নিশিদিন
এবার দহনে নিভে আসে
সোনার রূপের দেহ মন!
মনের কথাই যদি বল
আষাঢ় মাসের রূপকথা
কদম বনের এলোমেলো
স্বভাব চঞ্চল চমকানো
বিদ্যুৎ বিহ্বল করে তোলে
তোমার আমার মাঝে পথ
সহসা তোমাকে দেখে মন
বরষা পিড়ীত অভিসার
কদম ফুলের ঝরে পড়া
শেষের দিনের যাত্রাপথ
এমন ভাবেই থেকে গেল
তোমার আমার সংসার।।
No comments:
Post a Comment