মধ্যদুপুরের ডায়েরি থেকে (চার)
এক আগুন ; তার কতরকম প্রসাধন! কখনও
উষ্ণতা, কখনওবা প্রেমে-শুদ্ধতায়
অপ্রেমে কখনও;
কামনায়ও
আর ঈর্ষা-প্রতিহিংসা,পুড়িয়ে ছাড়খারের
গল্প কে-না জানে!
আসলে এতগুলো ডাকনামের ভেতর থেকে,
ভেতরের ভেতর থেকে, তারও ভেতর থেকে কী নামে আর কোন্ নামে ডাকা যায় ভাবতে ভাবতে মনে
পড়ে যায় পাশদিয়ে বয়ে চলা নদীর গায়ে-গা ঠেকিয়ে সেই লেলিহান শিখা...প্রায় বছর তিনেক
আগে এমন একটি আগুন আর জলের সাক্ষী হওয়ার কথা
এমন রাজকীয় আগে কখনও দেখিনি তোমায়!
গানস্যালুট রাস্তা করে দিচ্ছে এমন
সম্ভ্রান্ত। তফাৎ শুধু একটাই গতকাল
নিমেষে এগিয়ে এলো, ছেড়ে এলো ধোঁয়া ও
জল...আর সেইদিন নদীর আগে ছিল এক স্বর্গীয় উদ্যান... তবে গতকালকের ধোঁয়ার শরীর অনেক
অপুষ্ট ছিল।
সেদিনের মতো নয়। গাড়ি দ্রুত এগিয়ে, বদল হল জাঙ্ক জুয়েলারি...
চোখ অমলতাসের বনে হলুদ। অনেকটা আগুন
-আগুন! একটার পর একটা আমি খুলে পড়ছি আমি-র
থেকে...
অমলতাস বনের সকাল-দুপুর -রাতগুলো ভারী সুন্দর!
প্রখর পুরুষের মতো!
কালশিটে দাগ রেখে যাওয়া খোলা নিজস্ব
দুপুরের মতো! এখানে কখনও সন্ধে নামে না
যদিও...
দুপুরগুলো বিকট শব্দে তখন ভাঙছিল
তীব্র অসম্মান-অভিমান খানখান করে
অবশিষ্ট যেটুকু ছিল মুখে পুরে নিলাম
মুহূর্তে!
মায়ের গন্ধের মতো... সে তো তাইই,
শুধু সময় নগ্নতাকে উলঙ্গের উল্লাসে
ঢেকে রাখে এই যা!
কতদিন পর হারানো -মা যেন বেড়ে দিলেন
মোটাভাত,যাঁর কানে তখনও
ওঠেনি তিনটি বিন্দুর লতি আটকানো চেন
দুল! লতিটা আর কখনোই
ফেরত পাবে না, চোখবন্ধ করেও শিশুটির
খুঁজে নেওয়া নরম আঙুল! সবটাইই চেনে আটকে গেছে। বিন্দুটি অস্থির হতে হতে স্থির...
চন্দ্রাহত বালিকা তবু চোখবুজে নাভি
পর্যন্ত টেনে নেয় অমলতাস ও তার সমগ্র!
খাদ্যশৃঙখলের অজুহাতে যে-নিষ্ঠুরতা রোজ
লেখা হয়,তার অসহায় মুখে সন্তানেরই অবিকল চোখ-নাক-মুখই থাকে... আমরা দেখি না। কেননা,
আমরা দেখবো না। দেখতে চাই না।
আজ যারা পালিয়েছে, কালও তারা কোথাও ছিল
না
যে শুধু বলে যায় মানুষ আগের আমিকে
দেখার জন্য এমন ছটফট করবে,এতটাই বদলাবো আমিও...অথবা আমার মৃত্যুর জন্য প্রার্থনা
কোরো,এই কষ্ট আর সহ্য করা যায় না... আসলে,
অর্থহীন প্রলাপ। অনেকটা ব্ল্যাক পোরসের মতো ব্ল্যকমেলিং!
কিন্তু সেই মানুষটির সবটুকুই কি প্রলাপ!
মেহেরুন্নিসা তুমিও জখম, আমিও...অনেকটা আগুনের বহুনাম-ভাব অথবা
হ্যালুসিনেশনের মতো...
নেই কিন্তু আছে...
মোট জুড়ে যাওয়া দুপুর -রাত মিলে হাতে
গোনা যে-ক'টি প্রহর ছিল
শুধু
গলাই সেধেছো, গান তোমার দাঁড়াতে পারেনি একটি বারও! তুমি দেখাতে চেয়েছো থিওরি... আমিও বাধ্য মেয়ে গান নয় থিওরিই বুঝেছি
ফিজিক্সের ক্লাসে ঘেমে ওঠা না-বোঝা সেই
ছাত্রীটির মতো... আসলে, আমরা গান চাইই
সকলেই।শুধু কথা আর শুধু সুর নিয়ে তুমি কী কঅঅরে গানের গল্প বলো... তেমন তো নও মোটেই নও তুমি! গান পোশাক ছেড়ে পাশ
ফেরে...
আমি থেকে খুলে আসে আমি.... রক্তগুলো
নদীর দিকেই ক্রমশ... বেড়ালটা আমার শরীর চাটছে...
খাদ্যশৃঙখল মনে পড়ে যাচ্ছে... প্রিয়তম সন্তানদের নরম মুখ! মেয়েটি স্পষ্টত
বদল চায় প্রতিরাতের সায়া-প্যান্টি ছাড়ার মতো...
আমূল বদল অথবা মৃত্যু কিংবা মৃত্যু
দুয়া! কোনো দোষ নেই তার... মেহেরুন্নিসা জানে এমনটাই হয়।
হওয়ার কথাও।আমিও জানি...
আগুনের গল্প বলতে গেলেই যে কতবার এভাবে
হারাই!
কানন দেবীর গান আর মনোবালার নাচ,কী করে
বুঝবে সেসব!
আসলে মনোবালারও একটা গল্প আছে, চিরুনি দিয়ে জ্যোৎস্নার অলৌকিক খোঁপার
মতো! খোঁপা ঘিরে হলুদ অমলতাস... কিলোমিটারের কাটা যখন ১১০ ছুঁই ছুঁই... আমার গলার সরু গলিপথে যখন কার্লসবার্গ... তখন জানলাম মনোবালার মাথার চিরুনির দাঁতগুলো
আসলে আলপিনের ছিল...
মনোবালা আমাদের বুঝতে দেয়নি কখনও
সে-কথা...সংখ্যাহীন পিতামহ ভীষ্ম আর যীশুর
আড়াআড়ি আলাপ আর মুখরা নিয়ে জেগে থাকে মনোবালা...
অনন্তকাল ধরে মনোবালারা আগুনঘূণ
হয়... ম্যেহেরুন্নিসা আর আমি জানি
অনেকগুলো ক্ষমার গল্প থেকে পচা মাংসের
গন্ধ
গা-গুলিয়ে পালিয়ে যাওয়া সেই বুকের কাছে
জমা আছে ঋণ
ফিরে এসেছি বহুকাল
আসতেই হত।
যেমন এই বর্ষাতেই আগামী বর্ষার
মৃত্যুর ভবিষৎবাণী, ঠিক তেমনই..
ম্যেহেরুন্নিসা জানে তার হলুদ রিবন
অমলতাস বাগানে সেদিন থেকেইই, যেদিন সে নিজে হাতে স্তন আর যোনি জমা রেখে এসেছিল
আমার কবরের তুলতুলে বিছানায়...
ম্যহেরুন্নিসা জানে টাকিলা আর নীল আলোর
সাথে এসব গল্প গোগ্রাসে গেলা যায়! ওয়ান
শট... স্ট্যাটাস , ডিপি, পিপি দ্রুত রংবেরঙের স্টকিংসের সাথে...
আমার হাসি পায়,কান্নাও...
হাসমিকে দেখে হত্যা করতে ইচ্ছে হয় আরও
দু-দশটা
আমি পোশাক পরি নিয়মমতো....
ম্যহেরুন্নিসাও...
বর্ষা আর বল্লম নিয়ে জেগে থাকে পৃথিবীর
সমস্ত অমলতাস বন...
' ওগো দুখজাগানিয়া তোমায় গান শোনাবো... ' কবরের মাটি আলগা করে
বেরিয়ে আসে আমাদের সমবেত তৃষ্ণা আর গান...
আহা!!! তোমার কলমে কুর্ণিশ
ReplyDelete